শ্রী ভীমনারায়ণ মিত্রের লেখা “পশুক্লেশ মোচন মহান ধর্ম” বইটিতে লেখক বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তরের মাধ্যমে কিছু নৃশংস মানুষের দ্বারা সর্বদা অত্যাচারিত নানা ধরণের পশু পাখিদের কেশ কীভাবে মোচন করা সম্ভব এবং যে সব বন্য প্রাণীরা স্বার্থান্বেষী, অর্থলি এব হিংস্র মানুষের কবলে প্রায়ই প্রাণ হারাচ্ছে, সেইসব প্রাণীদের কীভাবে রক্ষা করা উচিৎ, সেই বিষয়গুলি সুস্পষ্টরূপে ব্যাখ্যা করেছেন। আমাদের দেশে পশু পাখিদের কেশ মোচনে বিভিন্ন আইন কানুনও আছে। ওইসব আইনের ধারা যথাস্থানে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে, নিষ্ঠুর মানুষের কবলে পড়ে যে সব পশুপাখিরা প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা ভোগ করছে আমরা অবশ্যই ওদের দুর্বিষহ যন্ত্রণার কবল থেকে মুক্তি দিতে পারি। তাই লেখক পশুক্লেশ মোচনে সংশ্লিষ্ট সব আইনের ধারাগুলি যথাস্থানে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া, সব ধর্মের ধর্ম প্রবর্তক মহাপুরুষরাই তো আমাদের পশুপাখিদের প্রতি দয়ালু হতে বলেছেন। সে জন্য লেখকইটিতে পশুপাখিদের ক্লেশ মোচনে সংশ্লিষ্ট সবধর্মের মহাপুরুষদের বাণী এবং তাঁদের ধর্মিয় সব নিদের্শ উপস্থাপিত করেছেন।
যেসব প্রাণীরা মানুষের দ্বারা প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত হয়ে নারকীয় যন্ত্রণা ভোগ রছে(যেমন পশুদের দ্বারা টানা গাড়িতে মাত্রাতিরিক্ত ওজন চাপানো এবং ওই ওজন বহন করতে না পারলেই রোচিতভাবে ওদের প্রহার করা, খাঁচায় বন্দি করে পাখি পোষা, অত্যন্ত গাদাগাদি অবস্থায় যন্ত্রণাদায়কভাবে গবাদি প্রাণীদের ট্রাকে চাপিয়ে কসাইখানায় পরিবহন করা এবং সেখানেও নানাভাবে যন্ত্রণা দেওয়া, পশুপাখিদের অঙ্গহানি,বন্য পশুপাখি শিকার করা বা ফাঁদ পেতে ধরা এভং বিক্রি করা ইত্যাদি)। ওই সব প্রাণীরাও তো ঠিক আমাদের মতই অনুভূতি সম্পন্ন এবং ওদেরও তো সুখ স্বাস্থ্য এবং স্বাধীনভাবে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তাই ওই সবলা প্রাণীদের কেশমোচন করাই তো প্রাণী শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের মহান ধর্ম হওয়া উচিত। তাছাড়া, মানুষের অত্যাচারে বহু প্রজাতির পশুপাখিরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। যেসব প্রাণীরা প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছে, ওদের সংরক্ষণ করা তো আমাদের সকলেরই কর্তব্য। কারণ, বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখিরা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়াতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে, যার বিরূপ প্রভাব প্রায়ই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তাই বইটি প্রত্যেকের, বিশেষ করে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পড়া যেমন প্রয়োজন, তেমনি পশুক্লেশ মোচনে সকলেরই কিছুনা কিছু কাজ করাও বিশেষ প্রয়োজন।